বহিস্কৃত মাছ বা ট্র্যাশ ফিশ এর যথাথথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণঃ


বর্তমানে সারা বিশ্বে মৎস্য উৎপাদনে শীর্ষদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২ সাল নাগাদ আমাদের এ অবস্থান হতে পারে আরো উন্নত। বিশাল সমুদ্রসীমার বেশিরভাগ অংশ অব্যবহৃত থাকা সত্ত্বেও সমুদ্রে মৎস্য আহরণের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশ ২৫ তম অবস্থানে। এত অর্জনের মধ্যেও দুঃখের ব্যাপার এই  যে, যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে প্রতিবছর সমুদ্র থেকে আহরিত মাছের একটি বড় অংশ প্রায় ১০ লাখ টন অপচয় হয় যেগুলোকে ট্রাশ ফিশ নামে অভিহিত করা হয়। ট্রাশ ফিশ বলতে সাধারণত বোঝায়, সমুদ্র থেকে মাছ আহরণের সময় কাঙ্খিত দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট যে মাছ বা জলজ প্রাণি কাঙ্খিত মাছের সাথে জালে উঠে আসে। এই ট্রাশফিশ হয়তো ফেলে দেয়া হয় সমুদ্রে বা ভাগারে না হয় খুব কম দামে বিক্রি করা হয় আঞ্চলিক বাজারে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, এই ট্রাশ ফিশ থেকে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো যেমন চীন, জাপান, মালয়েশিয়া ও ইউরোপীয় দেশগুলোতে তৈরি করা হয় স্যুপ, ফিশ পেস্ট, ফিশ রোল, ফিশ বল সহ নানা জাতের দামি খাবার। আমাদের দেশের ব্যবসায়ী ও মৎস্য বিভাগে জড়িত ব্যক্তিরা যদি এই ব্যাপারে সুদৃষ্টি প্রদান করে তবে আমাদের দেশেও ট্রাশ ফিস ব্যবহার করে এই ধরণের পণ্য তৈরি ও বাজারজাতকরণ সম্ভব হবে। তাছাড়া ট্রাশ ফিশ থেকে বিভিন্ন সংরক্ষণের উপযোগী প্যাকেটজাত খাদ্যপণা তৈরি করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে। যার ফলে একদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে আর অন্যদিকে নিশ্চিত হবে ট্রাশফিশের যথাযোগ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবহার।
এই জন্য যা প্রয়োজন তা হলো একটু সচেতনতা ও সম্মিলিত কার্যকরী পদক্ষেপের। যদি এগুলো নিশ্চিত করা যায় তবে এই ট্রাশ ফিশের যথাযোগ্য ব্যবহার ফিশারিজ সেক্টরে ও অর্থনীতিতে করতে পারে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।


ফাহমিদা আলী রিয়া
ফিশারিজ ২য় বর্ষ,

“চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়”

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ঝিনুক থেকে মুক্তা তৈরির রহস্য.......

মাছ, পোল্ট্রি, প্রাণিখাদ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্ল্যাক সোলজার মাছির (Black soldier fly) লার্ভা:

মাছের আঁইশের নানাবিধ ব্যবহারঃ